তাজা খবর:
Home / আমাদের সম্পাদকীয় / মাতৃমৃত্যু রোধে লক্ষ্য থেকে এখনো পিছিয়ে কেন
মাতৃমৃত্যু রোধে লক্ষ্য থেকে এখনো পিছিয়ে কেন

মাতৃমৃত্যু রোধে লক্ষ্য থেকে এখনো পিছিয়ে কেন

আমাদের সম্পাদকীয়:

প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ সালের হিসাবে ১ লাখ শিশু জন্ম দিতে গিয়ে ১২৩ মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। দুই দশক আগে, অর্থাৎ ২০০০ সালে এ হার ছিল ৪৪১। বছরে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কমছে। এটাই যথেষ্ট নয়। জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল  বলেন, ‘আমাদের দেশে মাতৃমৃত্যুর হার এখনো তিন অঙ্কে রয়ে গেছে। ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কায় এ হার দুই অঙ্কে। বিশ্বের অনেক দেশে তা এক অঙ্কে।’

এসডিজি বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০-এ নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। আগামী সাত বছরের মধ্যে তা অর্জন করা যাবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের চেয়ে মাতৃমৃত্যুর হার আফগানিস্তান, নেপাল ও পাকিস্তানে বেশি। দেশ তিনটিতে এ হার যথাক্রমে ৬২০, ১৭৪ ও ১৫৪। ভারতে মাতৃমৃত্যুর হার ১০৩। অন্যদিকে ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কায় এ হার যথাক্রমে ৬০, ৫৭ ও ২৯।

এ পরিসংখ্যান প্রমাণ করে না যে বাংলাদেশের মাতৃস্বাস্থ্যসেবা ভালো অবস্থানে আছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান মানবসম্পদ ও স্বাস্থ্যসেবার প্রায় সব সূচকেই পেছনে আছে। প্রশ্ন হলো ভারত, মালদ্বীপ, ভুটান বা শ্রীলঙ্কা থেকে আমরা পিছিয়ে থাকব কেন। এর মধ্যে শেষোক্ত তিনটি দেশের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো।

স্বাস্থ্যসেবার অনেক ক্ষেত্রে আমাদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেক কমিয়ে এনেছি। শিশুমৃত্যুর হার প্রতি ১ হাজারে ১৫ জনে নেমে এসেছে। ২০০৯ সালে ছিল ২৮। কিন্তু মাতৃমৃত্যু হারের অগ্রগতি তুলনামূলক কম।

আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চলে এসেছি। উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু মাতৃমৃত্যু রোধে কেন আমরা পিছিয়ে থাকব? অবস্থার উত্তরণে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা পরিবার-পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে জরুরিভাবে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে।

বিনিয়োগ না বাড়লে নিরাপদ প্রসবের জন্য যে প্রশিক্ষিত ধাত্রী প্রয়োজন, তা-ও পাওয়া যাবে না। শহর-গ্রাম কিংবা ধনী, গরিবনির্বিশেষে সব নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা গেলে মাতৃমৃত্যু দুই অঙ্কে নামিয়ে আনা অসম্ভব নয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এসডিসির লক্ষ্য অধরাই থেকে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Close