তাজা খবর:
Home / আমাদের স্বাস্থ্য / দুটি কিডনি নষ্ট হলেও কি জীবন বাঁচানো যায়, যা বলছেন চিকিৎসক
দুটি কিডনি নষ্ট হলেও কি জীবন বাঁচানো যায়, যা বলছেন চিকিৎসক

দুটি কিডনি নষ্ট হলেও কি জীবন বাঁচানো যায়, যা বলছেন চিকিৎসক

আমাদের সংবাদ ডেস্ক:

সারা বিশ্বের প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ কিডনি রোগে ভুগে থাকেন। সঠিক চিকিৎসার অভাবে মারা যান এর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কিডনি ফেইলিউর কী অবস্থায় বলা যেতে পারে, এবং দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেলেও কি কোনো মানুষ বেঁচে থাকতে পারে- এসব প্রশ্নের ব্যাখ্যা করেছেন নয়া দিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সুধীর চাড্ডা।

কিডনির প্রধান কাজ হলো রক্ত পরিষ্কার করা। প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং লোহিত রক্ত ​​কণিকা উৎপাদনের পাশাপাশি কিডনি শরীরের পিএইচ মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরে বর্জ্য পদার্থ জমতে শুরু করে। এমনটা হলে শরীরে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে প্রাণও হারাতে পারে।

কিডনি বিকল কী?

শরীরে শিমের আকৃতির মতো কিডনি। এগুলো পাঁজরের ভেতরে পেছনে অবস্থিত। সাধারণত কোনো মানুষের শরীরে উভয় কিডনিই কাজ করে। কিন্তু কোনো কারণে যদি একটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে বাকি একটি মাত্র কিডনি নিয়েই বেঁচে থাকতে পারে মানুষ। তবে বেঁচে থাকা কিডনি যে ঠিকঠাক কাজ করে। সচেতনতার অভাব এবং সময়মতো চিকিৎসার অভাবে মানুষের অকাল মৃত্যু পর্যন্ত হয়।

কাদের কিডনি বিকলের ঝুঁকি বেশি? 

ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের রোগীদের কিডনি ফেইলিউর সমস্যায় পড়তে হয়। শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। যে কারণে কিডনির পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য অঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। উচ্চ রক্তচাপে রক্ত ​​​কোষে রক্ত ​​খুব দ্রুত প্রবাহিত হয়। দ্রুত রক্তপাতের কারণে কিডনির কোষ নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে কিডনি ফেইলিউরের সমস্যায় পড়তে হয়। কিডনি বিকলের পারিবারিক ইতিহাসও রয়েছে। ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

কেন কিডনি বিকল হয়? 

যারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ খান তাদের কিডনি ফেইলিউরের ঝুঁকি অনেক বেশি। হাইপার টেনশন, স্ট্রোক ইত্যাদি সমস্যায় ভুগছেন তারাও ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ধূমপানও কিডনি বিকল হওয়ার শঙ্কা বাড়ায়।

কিডনি ফেইলিউরের লক্ষণ 

► বমি
► ক্লান্তি
► খিদে কমা
► দুর্বলতা
► ঘুমোতে অসুবিধা
► খুব বেশি বা খুব কম প্রস্রাব করা
► পা এবং গোড়ালি ফোলা
► শুষ্ক ত্বক এবং চুলকানি

দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে কি জীবন বাঁচানো যায়? 

ব্রেন ফেইলিউর, হার্ট ফেইলিউর বা লিভার ফেইলিউরের তুলনায় কিডনি ফেইলিউর রোগীদের জীবন খুব সহজেই বাঁচানো যায়। এর জন্য ডায়ালাইসিস বা ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়। রোগীর বয়স কম হলে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু রোগীর বয়স বেশি হলে ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে জীবন বাঁচানো যায়। এর মাধ্যমে কোনো সমস্যা ছাড়াই ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যে বাঁচা যায়।

কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য কী করতে হয়?

দাতা পরিবারের একজন সদস্য থাকতে হবে। কিডনি প্রতিস্থাপন দুই ধরনের হয়। প্রথমত, যাদের রক্তের গ্রুপ মেলে। দ্বিতীয়ত, রক্তের গ্রুপ মেলে না। যাদের রক্তের গ্রুপ মিলে যায় তাদের কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচ পড়ে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। যাদের রক্তের গ্রুপ মেলে না তাদের খরচ ১৫ লাখের কাছাকাছি। রক্তের গ্রুপ না পেয়েও কিডনি দান করা যায় সহজেই। এ জন্য কিডনি দাতার দুটি কিডনি থাকতে হবে। দুটিই স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে হবে।

কিডনি বিকল এড়াবেন কীভাবে? 

কিডনি ফেইলিউর থেকে স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নেওয়া দরকার। রক্তে শর্করা এবং রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে কোনো ওষুধ খাবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Close