তাজা খবর:
Home / silde / চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; নিয়োগে অনিয়মই যেখানে নিয়ম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; নিয়োগে অনিয়মই যেখানে নিয়ম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; নিয়োগে অনিয়মই যেখানে নিয়ম

আমাদের সম্পাদকীয়:

এর আগে গত বছরের মার্চে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অর্থ লেনদেন নিয়ে পাঁচটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। এসব ফোনালাপ ছিল উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী খালেদ মিছবাহুল ও হিসাব নিয়ামক দপ্তরের কর্মচারী আহমদ হোসেনের সঙ্গে দুজন নিয়োগপ্রার্থীর। খালেদ মিছবাহুল উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বেও ছিলেন। ফোনালাপ ফাঁসের পর খালেদ মিছবাহুলকে ব্যক্তিগত সহকারীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গুরু পাপে লঘু দণ্ড।

অবশ্য উপাচার্য শিক্ষকদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, মেধাবীদেরই শিক্ষক পদে নেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, সাবেক প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া কিছু পদে লোক নিয়োগ দিয়েছেন, আরও কিছু নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। সেটা না পেরে পদত্যাগ করেছেন এবং অন্যদেরও প্রশাসনের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলেছেন।

২০১৯ সালের ১৩ জুন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক শিরীণ আখতার। নিয়োগে বিতর্কের শুরু ২০২১ সালের জুনে। ওই সময় বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে খণ্ডকালীন হিসেবে ১২ শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয় ১৫ জনকে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে। উপাচার্যের ভাষ্য অনুযায়ী সদ্য পদত্যাগকারী প্রক্টর যদি অনিয়ম করে কাউকে নিয়োগ দিয়ে থাকেন, তখন তিনি বাধা দিলেন না কেন? এর অর্থ একসময়ে অনিয়মটা তাঁরা মিলেমিশেই করেছেন। ব্যক্তির খেয়ালখুশিমতো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।

প্রতিষ্ঠান চলতে হবে আইনকানুনের ভিত্তিতে। উপাচার্য যদি মনে করেন, কোনো পদে লোক নিয়োগ করা দরকার, আগে তঁাকে পদ সৃষ্টি করতে হবে, নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে।

কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে তঁার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারীর যে ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে, তা কী প্রমাণ করে? কারও বিরুদ্ধে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেননি। বদলি করেছেন মাত্র।

নিয়োগ নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের মুখোমুখি অবস্থান কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, একজন প্রাধ্যক্ষসহ ১৬ জন শিক্ষকের প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া উপাচার্যের প্রতি তঁাদের অনাস্থারই বহিঃপ্রকাশ।

কেবল নিয়োগ নয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সব কাজে শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি থাকতে হবে। গত দুই বছরে সেখানে যত নিয়োগ হয়েছে, সেগুলোতে কী কী অনিয়ম হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে নিয়ে এই তদন্ত হলে চলবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের শিক্ষাবিদদের নিয়ে তদন্ত করতে হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও ভূমিকা রাখতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Close