ধর্ম ডেস্ক:
জাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। জাকাতের সঠিকভাবে আদায়ে বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন আল্লাহ তায়ালা। এ সর্ম্পকে বর্ণিত হয়েছে, ‘এবং তোমরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য জাকাত আদায় করো। অত:পর তিনি তা দ্বীগুণ করে দেবেন। (সুরা: আর-রুম,আয়াত : ৩৯)
অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘মুত্তাকিরা জান্নাতে ফোয়ারার নিকটে থাকবে। তারা গ্রহণ করবে, যা তাদের পালনকর্তা তাদেরকে দেবেন। নিশ্চয় ইতিপূর্বে তারা ছিল সত্কর্মপরায়ণ, তারা রাত্রির সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত, রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত এবং তাদের ধনসম্পদে ছিল প্রার্থী ও বঞ্চিতের হক বা ন্যায্য অধিকার।’ (সুরা-৫১ জারিয়াত, আয়াত: ১৫-১৯)
জাকাত আদায়ে গরিমসি করলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে, ‘আর যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেওয়া হবে। (আর বলা হবে) ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর।’ -(সূরা তাওবাহ, আয়াত: ৩৫, ৩৬)
জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য শর্ত হলো কারো কাছে মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ, সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর কোনো একটির সমমূল্যের নগদ টাকা বা ব্যবসার পণ্য থাকতে হবে।
এবং এই পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ এক বছর তার মালিকানায় থাকতে হবে। তবে এই সম্পদের বছর গণনা করতে হবে চন্দ্রমাস হিসেবে। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে একজন প্রশ্ন করেছেন,
‘আমি গত বছর নভেম্বর মাসের শুরুতে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হই। আমার ইচ্ছা ছিল, এ বছর নভেম্বর মাসে আমার সম্পদের হিসাব করে জাকাত আদায় করব। কিন্তু আমার এক বন্ধুর কাছে শুনলাম, জাকাতের বছর নাকি চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী গণনা করতে হয়। জানতে চাচ্ছি, তার কথা কি ঠিক?
এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, হাঁ, আপনার বন্ধু ঠিক বলেছে। জাকাতবর্ষের হিসাব চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী করতে হয়; সৌরবর্ষ অনুযায়ী নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গত বছরের নভেম্বর মাসের শুরুতে চান্দ্রমাসের কত তারিখ ছিল— তা জেনে সে অনুযায়ী বছর গণনা করতে হবে।
—ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যাহ ১/৩৭০; ফাতহুল কাদীর ৪/১৩২; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৪